মাসুদ পারভেজ, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি বর্ষণের ফলে ও উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে জিঞ্জিরাম নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। এদিকে পাহাড়ি ঢলে জিঞ্জিরাম নদের পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার পূর্বাঞ্চল। তলিয়ে গেছে ২১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাময়িক ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ে পানি উঠায় ব্যহত হচ্ছে পাঠদান। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপজেলার ৩৫ গ্রামের ২৬ হাজার পরিবার। অপর দিকে আকর্ষিক বন্যায় তলিয়ে গেছে ৫ শত হেক্টর জমির ধান,পাট ও শাকসবজি। এছাড়াও রাস্থাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগের পাশাপাশি কষ্টে দিন কাটছে শ্রমজীবি মানুষের। চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌকা ও কলা গাছের ভেলা।
এ ছাড়া দেখা যায়, পুরাতন যাদুরচর ও চর লালকুড়া, খেওয়ারচর ও পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪ টিতে পানি উঠেছে। এদিকে আকর্ষিক বন্যার কারনে তলিয়ে যাওয়া ধান নিয়ে বিপাকে আছেন কৃষক। রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বামতীর রক্ষাবাঁধের কাজ শেষ না করে অনেক ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে গেছেন। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি উপচে ভাঙ্গনের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এব্যাপারে বড় মাদারটিলা গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান আপসোস করে বলেন, আমার ৪০ শতাংশ জমির ধান হঠাৎ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কোনো রকমে পানিতে ডুবে কাটছি। কামলা না থাকায় নিজে ধান মাড়াই করতেছি। সব ধানে গাছ জালাইছে কিছুই হবে না এই দান দিয়া।
এ বিষয়ে বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির ফলে বামতীর রক্ষাবাধের কাজটিও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদাররা। ফলে এখানেও নদী ভাঙ্গণ থেকে রক্ষা পাবে না এলাকাবাসী। এতে ক্ষতি হয়ে যাবে সরকারের বরাদ্দের অর্থ। উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার পুর্বাঞ্চলে পাহাড়ী ঢলে হঠাৎ আকর্ষিক বন্যায় ২১ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে তবে সাময়িক ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি শুকিয়ে গেলে আবার ক্লাস শুরু হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে খুব একটা ক্ষতি হবে না। তিল, তিষি, পাট, আউশ ধান, মরিচ, সাকসবজিসহ প্রায় ২ শত হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হতে পারে। তবে বোরো ধান বা কেটে নেয়ার মতো কোন জাত থাকে তারাতারি কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। উপজলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, বন্যার বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। জেলা পানি উন্নয়ন বোড নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
Discussion about this post